Tuesday, January 27, 2015

সিএসই/আইটি ( ইউআইটিএস ) বিভাগের প্রথম ফেয়ারওয়েল এর কবিতা

"চলে যাবে জানি,
টেনেছ অনেক ঘানি!
আমায় দিয়ে করিয়েছ অনেক দাঁত কিরমিরানি!
"কাওকে" সাথে নিয়ে, পড়া ফাঁকি দিয়ে
অনেক, অনেক ঘুরেছ তোমরা হাতিরঝিলে যেয়ে।
কিন্তু, আমার কাছে রেখেছ অনেক হোমওয়ার্ক বাকি!
যতবারই দেখেছি তোমাদের পরীক্ষার খাতা
নাপা এক্সট্রাও থামাতে পারেনি আমার মাথার ব্যাথা!
“যত্তসব ফাঁকিবাজের দল” -
বারে বারে চেঁচিয়ে উঠেছে আমার অন্তঃস্থল!
থাক - এখন যাবেই যখন চলে
কি আর হবে এসব কথা বলে!
তবুও এটুক শুনে রাখ -
যদি না কর উজ্জ্বল আমার এই মুখ
বুঝতে পারবে পাখির মত উড়তে পাড়ার সুখ!
ভার্সিটির ওই দশ তলার জানালা আছে খোলা
ভুলিয়ে ভালিয়ে কাছে নিয়ে দেব একটা ঠেলা!
থাক - অনেক হল প্যাঁচাল
আবার বলি সেসব কথা, যেসব কথা বলে
ক্লান্ত এখনো হইনি আমি মুখে ফ্যানা তুলে।
"শুধু আমার জন্যই আমি নই"- থাকে যেন মনে।
"সবাই আমার আপন জন" - এই ভাবনা যত্ন করে রেখ তোমাদের প্রাণে!"
---------আমার ছাত্র/ছাত্রীরা - তোমাদের জন্য এই কবিতা। আমি কেন তোমাদের এত ভালবাসি, তার কারণ খুঁজতে যেয়ে ব্যর্থ হয়েছি বার বার।  থাক, কিছু কিছু কারণ না জানাই ভালো!  তোমাদের দেখলে অনেক সময় রাগের ভান করলেও আমার ভেতর আসলে অনেক আনন্দ হয় - বাধ্য হয়ে হেসে ফেলি!  বার বার মনে হয় - "মুক্তি নাই রে পাগল!"
যাই হউক - তোমরা মনে রেখ, তোমরা শিক্ষিত হয়েছ।  কিন্তু শিক্ষিত হবার মানে শুধুমাত্র জ্ঞান, বিজ্ঞানে দক্ষতা অর্জন নয়, শিক্ষিত হবার সবচেয়ে বড় লক্ষণ হচ্ছে অন্যের জন্য ভাবতে শেখা।  অর্থ উপার্জন তো করতেই হবে, কিন্তু তা করতে গিয়ে অন্যদের ভুলে  গেলে হবেনা!  অনেকেরই তোমাদেরকে অনেক প্রয়োজন।  তোমরা সেটা হয়ত জাননা, আর যাদের প্রয়োজন তোমাদেরকে, তারাও জানেনা যে তোমাদেরকে তাদের প্রয়োজন!  যে ছেলেটি শীতের কনকনে রাতে খালি পায়ে ঘুরে বেড়ায়, যে মেয়েটি আশ্রয়হীন, যে মা খাবারের স্বল্পতার কারনে না খেয়ে থেকে সন্তানকে খাওয়ায়, যে বাবা পানি করে রক্তকে প্রতিদিন, যে মানুষ গুম হয়ে যাওয়া ভালবাসার মানুষের অপেক্ষায় জেগে থাকে প্রতি রাত, যে মানুষ নির্যাতিত কোন না কোন ভাবে - এই সব মানুষদেরই তোমাদেরকে  খুব প্রয়োজন। 
প্রতিদিন তোমার চেষ্টা করবে কোন না কোন অন্যায়, সে যত ছোট হউক না কেন, প্রতিহত করতে। চেষ্টা করবে কোন না কোন ভাবে পরিচিত/অপরিচিত কাওকে সাহায্য করতে। হিসাব করে দেখ - তোমরা কতজন আছ।  এভাবে কাজ করলে প্রতিদিন কতগুলো ভালো কাজ হবে!  এভাবেই তো বিপরীতমুখী স্রোত দাড় করাতে হবে। হতাশার কিছু নেই, দূরে থাকবে সেসব লোক থেকে, যারা ধরেই নিয়েছে কোন কিছু করে কোন লাভ নেই - এরা ইতিহাস জানেনা।
সে মহান স্রষ্টা, যার কোন শরিক নেই, নেই সমকক্ষ কেও, যাকে বিভিন্ন চমৎকার সব নামে ডাকে বিভিন্ন মানুষ, তিনি তোমাদের ভালো রাখুন, ইহকাল, পরকাল দুই পৃথিবীতে - এই কামনা করে শেষ করলাম!  আসসালামুয়ালাইকুম!