Wednesday, November 27, 2013

দুই দলীয় রাজনীতি

আমি তেমন কিছু জানিনা, শুধু আমার কিছু চিন্তা ভাবনা তুলে ধরলাম এখানে বর্তমান দুই দলীয় রাজনীতির উপর -

দুই দলিয় রাজনীতি যেভাবে কাজ করে -

প্রথম বেক্তিঃ আঃলিঃ না এলে দেশে জঙ্গিবাদ বেরে যাবে, দেশে অরাজকতা সৃষ্টি হবে!
দ্বিতীয় বেক্তিঃ  কিন্তু বিএনপি না এলে এ দেশে ইসলাম ধ্বংস হয়ে যাবে।  আর আঃলিঃ তো সন্ত্রাস করে।
প্রথম বেক্তিঃ জানি আঃলিঃ অনেক বাজে কাজ করে, কিন্তু বিএনপি কে চাই না, তারা দেশে ইমাম শাফির নিয়ম চালু করবে, সাম্প্রদায়িকতা বেরে যাবে - এটা মানা যায় না! আর তাদের দুর্নীতির কথা সবাই
জানে।
দ্বিতীয় বেক্তিঃ বিএনপির দুর্নীতির কথা ঠিক, তারাও খারাপ - কিন্তু আঃলিঃ সরকারের সময় অনেক ইসলাম বিরোধী কাজ হয়, আধুনিকতার নামে অনেক নোংরামি হয়! তাছাড়া আঃলিঃ কম দুর্নীতি করে নাই!  আর এমন এক সময় আসবে যখন দেখা যাবে তারা হিজাব নিষিদ্ধ করে দিয়েছে!

দুই দলিয় রাজনীতি আমাদের কে দুটো দলের ভেতর একটিকে বেছে নিতে বাধ্য করছে আমাদের মনের ভয়গুলোকে ব্যাবহার করে।  তৃতীয় কোন প্লাটফর্ম তারা তৈরি হতে দিচ্ছে না!  আমরা পরোক্ষভাবে
এদের অন্যায়গুলোকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি বিভিন্ন অজুহাতে।  আমাদের অনেক গুণীজনও এ ধরনের চিন্তা ভাবনার কারনে দলিয় বৃত্তের বাইরা আসতে পারছেন না।

"আমাদের আর কি করার আছে?  একজন না আসলে আরেকজন তো আসবেই!  তাই দুজনের ভেতর আমার মতের সাথে কিছুটা মিল আছে এমন একজন বেছে নেয়া ছাড়া উপায় নেই!  " - এধরণের চিন্তা
ভাবনা অধিকাংশ মানুষের।  আবার কিছু কিছু মানুষ ভাবেন - "তৃতীয় আর কে আছে!"  আমরা যত এ ধরনের ভাবনার ভেতর আবদ্ধ থাকব, আমাদের দুদলের জন্য তত মঙ্গল!

তাহলে আমাদের কি করা উচিৎ?  বাংলাদেশে হয়ত অনেক সুপ্ত নেতৃত্ব আছেন যারা জেগে উঠতে পারছেন না আমাদের এই চিন্তাধারার কারনে।  তারা ভাবছেন, "চেষ্টা করে আর কি হবে, ভোটের সময় তো মানুষ ভোট ঠিকই দেবে এই দুদলের একদল কে।"
কথা ঠিক!  তাহলে আমাদের, জনগনের, যা দায়িত্ব তা হচ্ছে নতুন নেতৃত্ব উঠে আসার পরিবেশ সৃষ্টি করে দেয়া।  এই পরিবেশ তৈরি করতে গেলে আমাদের জনগনের কাজ হবে বিবাদমান দুদলের প্রতি চরম
অনাস্থা প্রকাশ করা।  এই অনাস্থা প্রকাশিত হয়ে যাবে ভয়ে "না" ভোট উঠিয়ে দেয়া হয়েছে।  আমাদের এখন উচিৎ তাহলে নির্বাচন থেকে বিরত থাকা।  যখন অসংখ্য মানুষ নির্বাচন থেকে বিরত থাকবে, তখন
কারো সামর্থ্য হবে না এই সত্যকে লুকিয়ে রাখার।
তখন আমাদের অনেক সুপ্ত নেতৃত্ব ভরসা পাবেন, ভাববেন যে এবার একটা কিছু করা যায় - যে শুন্যস্থান তৈরি হয়েছে তা পূরণ করার চেষ্টা এবার করা যেতে পারে।  মানুষ তাদের সাথে পথ চলবে এই আশা তখন তাদের ভেতর তৈরি হবে।  এবং এই কাজে আমাদের বুদ্ধিজীবী শ্রেণী বিরাট ভুমিকা পালন করতে পারেন দলীয় রাজনীতির বাইরে এসে আর মানুষের ভালকে তাদের মন্ত্র হিসেবে গ্রহণ করেন।

মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যাবার এই নতুন নেতৃত্ব বের করে আনার চেষ্টা আমাদের করতেই হবে।  আর নাহলে এই ধ্বংসাত্মক এই "দুই দলীয় বৃত্ত" থেকে আমরা  বের হতে পারব না,  সামাজিক ন্যায় বিচার
আমরা প্রথিস্থিত করতে পারব না,  বিচার বিভাগের স্বাধীনতার মাধ্যমে আইনের চোখে সবাইকে সমান করতে পারব না।  অর্থনৈতিক সাম্য প্রথিস্থা করতে পারব না।
আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য এমন দেশ রেখে যাবার চেষ্টা আমাদের করা উচিৎ যে দেশ থেকে পালিয়ে যাবার চিন্তা তাদের মাথায়ই আসবে না!  এটা আমাদের দায়িত্ব!