ফজরের সালাত আদায় করিবার জন্য উঠিয়া আমার চারিপাশে মশাদের অজস্র মৃতদেহ দেখিয়া প্রমান পাইলাম যে আমি স্বপ্ন দেখিতেছিলাম না - আমি বাস্তবিকই সমস্ত রাত্রি আধো ঘুম, আধো জাগরণে মশককূলের সাথে সমরে লিপ্ত ছিলাম! মেজাজ খারাপ! সারাদিন কম্পিউটারের সামনে বসে থেকে যদি রাতে একটু ঘুমানো না যায় তাহলে বাঁচি কি করে! গরমে মশারি টাঙ্গালে ফ্যানের বাতাস পাওয়া যায় না। আর মশারি না দিলে মনে হয় আমার বাসার মশাগুলো সারা পাড়ার মশাদের দাওয়াত দেয় ডিনারের!
ছোটবেলায় কলকাতার একটা বহুল প্রচলিত কথা শুনতাম প্রায়ই - "রেতে মশা, দিনে মাছি, এই নিয়ে কলকাতায় আছি।" আমি কলকাতার খবর জানিনা - তবে ঢাকার খবর ভালভাবেই জানি! আমাদের এখানে মাছির উতপাত এখন কম, বেচারাদের বংশবৃদ্ধির হার কমে গেছে - সবই ফরমালিনের ফযিলত! কিন্তু মশারা এখানে বহাল তবিয়তে আছে। তাদের ভাগ্য ভালো তারা তাদের শিশুদের বৃদ্ধির জন্য মানুষের ফেলে দেয়া খাদ্যদ্রব্যেকে ব্যবহার করে না - নাহলে এতদিনে তাদেরও কেল্লা ফতে হয়ে যেত।
যাই হোক - শুধু মশা কি ঢাকাইয়ানদের (মানে ঢাকাবাসীদের) একমাত্র ভোগান্তির কারন? মোটেই না! গর্ব করে বলতে পারি রাস্তার ট্র্যাফিক জ্যাম আমার পনেরো মিনিটের রাস্তাকে দেড় ঘণ্টার রাস্তায় পরিণত করে দেয় খুব সহজেই! কোন ব্যপারই না! আর যদি গরমকাল হয় তবে তো কথাই নেই - গাদাগাদি ভিড়ে বাসে যখন আমরা থাকি, তখন সরসর করে সব ঘাম ঊর্ধ্বাঙ্গ বেয়ে নেমে গিয়ে জমা হয় আন্ডারওয়েরে যা খব দ্রুত চটকে লেগে যায় নিতম্বের সাথে! কি আনন্দায়ক অনুভুতি!
আর সবুজের বংশ নির্বংশ করে ফ্ল্যাট নির্মাণের তোরে ঢাকা শহর থেকে নিরমল বায়ু হারিয়ে গেছে অনেক আগে - মাঝে মাঝে দাঁত কিচমিচ করে বালিতে - মনে হয় দাঁত মেজে ফেলা যাবে, টুথপেস্টের খরচটাও বেঁচে যাবে!
হে আল্লাহ - এতসব নাগরিক সুযোগসুবিধা থেকে কবে মুক্তি পাব!
Onek Sondor Hoiche
ReplyDelete